আমি মোটা হবো কিভাবে - মোটা হওয়ার উপায় জেনে নিন

আমি মোটা হবো কিভাবে এ বিষয়ে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। সাধারণত অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়া যেমন এক সে সমস্যা তেমনি রোগা হওয়াও সমস্যা। তাই মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে।  

আমি-মোটা-হবো-কিভাবে

কি খেলে মোটা হওয়া যাবে এবং খুব কম সময়ের মধ্যে কোন ধরনের উপায় অবলম্বন করলে মোটা হওয়ার সম্ভব তা আজকে আমরা আর্টিকেল পড়ে জানতে পারব। সাধারণ নিয়ম ছাড়াও ওষুধ খেয়েও যে মোটা হওয়া যায় তা অনেকেরই ধারণার বাইরে।

পেজ সূচিপত্রঃ আমি মোটা হবো কিভাবে

আমি মোটা হবো কিভাবে

আমি মোটা হবো কিভাবে এ প্রশ্নের কারণ হচ্ছে আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ আন্ডার ওয়েট জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন। অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়া যেমন সমস্যা অতিরিক্ত শুকনা থাকা ও একইভাবে সমস্যার কারণ। তাই মোটা হওয়ার জন্য অনেকেই অনেক ধরনের পন্থা অবলম্বন করতে আগ্রহী। 

কিন্তু ফলাফল শূন্য। তাই আমরা আজকে আলোচনা করব মোটা হওয়ার বিষয়ক বেশ কিছু নিয়ম- শৃঙ্খলা। যা স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বৃদ্ধি হতে সাহায্য করবে।

নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ

নিয়মিত ব্যায়াম সকলেই ভেবে থাকেন শুধুমাত্র শুকানোর জন্য করা হয়। কিন্তু নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের সুস্থতার জন্য সব ধরনের মানুষের জন্যই খুবই জরুরী। আর অনেক ধরনের ব্যায়াম রয়েছে নিয়মিত করলে ওজন বৃদ্ধি পায়। এসব ব্যায়ামগুলো নিয়মিত জিমে গিয়ে অভিজ্ঞ ট্রেইনার এর সাহায্যে যদি করতে পারেন তবে আপনি খুব ভালোভাবে আপনার ওজন বাড়াতে সক্ষম হবেন।

ঘনঘন খাবার খানঃ

প্রতিটা মানুষেরই উচিত অন্তত দুই ঘন্টা পর পর ঘন ঘন খাবার গ্রহণ করা। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যখন আপনি মোটা হতে চান। এ সময় দুই ঘন্টা পর পর আপনি যদি উচ্চ প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট অথবা ক্যালরিযুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন তবে সেই পুষ্টিগুলো আপনার শরীরে খুব তাড়াতাড়ি স্থান তৈরি করে নিবে শরীরকে বৃদ্ধি করবে এবং আপনি মোটা হতে পারবেন।

খাবারে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়াঃ

ওজন বৃদ্ধি করার জন্য কার্বোহাইড্রেট খুব কার্যকরী একটি উপাদান। কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার বিশেষ করে ভাত ও রুটি খাওয়ার পরিমাণ যদি আপনারা বাড়িয়ে দিতে পারেন তবে খুব তাড়াতাড়ি মোটা হতে পারবেন। তবে অবশ্যই খুব বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবেনা। সাধারণের থেকে একটু বেশি পরিমাণ নিতে পারবেন এবং সাথে অন্য ফ্যাট জাতীয় খাবারের বিষয়েও সাবধান থাকবেন।

নির্ধারিত প্রোটিন গ্রহণ করাঃ

শুধু কার্বোহাইড্রেট খেলে হবে না সঠিক পরিমাণ প্রোটিনও গ্রহণ করতে হবে। এজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ডিম, দুধ, ডাল এর মত প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখতে হবে।

স্নাক্স হিসেবে ড্রাই ফ্রুটসঃ

প্রতিদিন ঘুমানোর আগে বা ঘুম থেকে ওঠার পর কিসমিস বা বাদাম এই ধরনের খাবার খেতে পারেন। সকালে ভারী খাবার খাওয়ার সময় এমন কিছু খাবার তৈরি করুন যেখানে আলমন্ড বা বাদাম জাতীয় খাবার থাকবে। ড্রাই ফ্রুটস এ যেহেতু প্রচুর ক্যালরি এবং ফ্যাট জাতীয় পদার্থ বেশি থাকে তাই ডায়েট চার্টে এগুলোর পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।

টেনশন করা যাবেনাঃ

অনেকে প্রচুর টেনশন করেন বিভিন্ন ধরনের সমস্যার জন্য। টেনশনের কারণে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া হয় না যার ফলে ওজন কমতে থাকে। তাই যতটা পারা যায় টেনশন মুক্ত থাকতে হবে।

পর্যাপ্ত ঘুমঃ

ঘুম যেকোনো সমস্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাধান। অবশ্যই প্রতিদিন ৮ ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। এর থেকে কম ঘুমানো যাবে না এবং ঘুম থেকে উঠেও নিয়মিত যোগব্যায়াম অথবা হাঁটাচলা করার অভ্যাস করতে হবে। 

দুধ ও মধু খাওয়ার অভ্যাসঃ

প্রচুর পুষ্টিকর ও ক্যালরি সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে দুধ ও মধু একসাথে খাওয়ার অভ্যাস করা জরুরী। বিশেষ করে ঘুমানোর আগে যদি এক গ্লাস দুধ ও মধু গুলিয়ে খাওয়া যায় তবে সেটা খুবই কার্যকর হবে। কারণ ঘুমিয়ে পড়লে দুধ এবং মধুর যে পুষ্টিগুণ তা খরচ হবে না এবং তা পুরোপুরি শরীরের ক্যালরি তৈরিতে সাহায্য করবে এবং ওজন বৃদ্ধি করবে।

চকলেট ও চিজঃ

প্রতিদিনের রেগুলার ডায়েটে চকলেট এবং চিজ রাখতে হবে। চকলেট এবং চিজ শরীরে ফ্যাট তৈরি করে যা শরীরের জন্য খুবই জরুরী। ওজন বৃদ্ধি করার জন্য আইসক্রিম বা জাঙ্ক ফুড না খেয়ে এসব হেলদী চকলেট এবং চিজ যদি খাওয়া যায় তবে শরীর সুস্থ থাকবে।

সাত দিনে রোগা থেকে মোটা হওয়ার সহজ উপায়

মোটা হওয়ার উপায় বের করার জন্য উপরে উল্লেখিত টিপসগুলো বা নিয়ম যদি সঠিকভাবে পালন করা যায় তবে অবশ্যই খুব তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া সম্ভব। সুস্থ দেহের অধিকারী সকলেই হতে চান। তাই বেশিরভাগ মানুষই খুব কম সময় বা সাত দিনের মধ্যে মোটা হওয়ার নিয়ম জানতে আগ্রহী থাকেন। 

কারণ যারা অতিরিক্ত শুকনা তাদেরকে দেখলে যেন মনে হয় তারা কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা জনিত কারণে ভুগছেন। তাই পরিমিত পরিমাণে খেয়ে ওজন বাড়ানো জরুরী। অনেক সময় ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করার পরও ওজন বাড়ে না। তার প্রধান কারণ যাদের ওজন এরকম বাড়তে চায় না তাদের মূলত হাড্ডিগুলো চিকন। 

আর চিকন হাড্ডির অধিকারী হওয়ার কারণে খাবার খাওয়ার পর হজম শক্তি খুব বেশি থাকে তাই দ্রুত হজম হয়ে যায় অন্যদের তুলনায়। দ্রুত হজম হওয়ার জন্য শরীরের পুষ্টি গুলো জমতে পারে না। তাই বেশি পরিমাণে খেয়ে ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করে যেতে হবে যদিও সেটা অনেক সময় সাপেক্ষ।

৪ দিনের রোগা শরীর মোটা করার উপায়

আমি রোগা হবো কিভাবে এটা বর্তমান সময়ের বহুল চিন্তার বিষয়। খুব কম ওজন বা চিকন স্বাস্থ্য অনেক সময় সম্মানহানি এর বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তাই যারা এই সমস্যাই ভুগছেন তারা বেশিরভাগই সমাধান খুঁজেন খুব তাড়াতাড়ি মোটা হওয়ার। কিন্তু সহজে সমাধান পাওয়া সম্ভব না। অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী মেপে মেপে খেতে হবে।

৪-দিনের-রোগা-শরীর-মোটা-করার-উপায়

একটু বেশি পরিমাণে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার গুলো। তাহলেও একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর অবশ্যই আপনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারবেন। তবে খুব তাড়াতাড়ি বা চার দিনের মধ্যে রোগা শরীর মোটা করার জন্য বেশ কিছু খাবারের ব্যাপারে সচেতন থাকা জরুরী। 

এই খাবারগুলো শরীরের অতিরিক্ত পরিমাণ প্রোটিন বা পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে যা ওজন বাড়াতেও সাহায্য করবে। কম সময়ে মধ্যে ওজন বাড়ানোর জন্য খাবারগুলো নিম্নে দেখানো হলো।

  • প্রতিদিন অন্তত এক গ্লাস নিয়ম করে ফুল ক্রিম দুধ খাওয়া।
  • ওজন বাড়ানোর জন্য কলা খুবই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার। প্রতিদিন নিয়মিত দুই থেকে তিনটি কলা খাওয়া স্বাস্থ্যকর।
  • ডিম শরীরের জন্য অতি উপকারী একটি খাবার। প্রোটিনের একটি সম্ভার। প্রতিদিন বেশি করে ডিম খেলে সব ধরনের পুষ্টির চাহিদাই পূরণ করা সম্ভব।
  • ঘি এবং গুড় খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। ভাতের সাথে ঘি বা অন্য তরকারিতে ঘি ব্যবহার করা এবং গুড় খাওয়ার অভ্যাস বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবারে ব্যবহার করলে খুব সহজেই ওজন বাড়ানো সম্ভব হয়।

সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়

অতি তাড়াতাড়ি মোটা হওয়ার জন্য সকালে খালি পেটে কি খাবেন বা সকালের খাবার কি হওয়া উচিত সে ব্যাপারে সচেতন থাকা জরুরী। কারণ প্রতিদিন সকালে অবশ্যই ওজন বাড়ানোর জন্য অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার থেকে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ঘরোয়া খাবার খাওয়া শরীরের জন্য ভালো।

ওজন বাড়ানোর জন্য খালি পেটে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি বানিয়ে খেয়ে ফেলা যায়। এসব রেসিপি গুলো ঘরে বসে তৈরি করা হয় বলে স্বাস্থ্যকর এবং বুঝে শুনে মেপে বানিয়ে ফেলা সম্ভব। কারণ কোন খাবারে যদি চিনি দিতে হয় এবং তা যদি বেশি পরিমাণে হয়ে যায় তবে তা অস্বাস্থ্যকর হবে। তাই বাড়ির খাবার তৈরি করেই সকালের খাবার খেয়ে ফেলা জরুরী।

  • সকালের খাবারের জন্য সবচেয়ে ভালো একটি উদাহরণ হচ্ছে মিল্কশেক। এই শেক বাসায় বানিয়ে ফেলা যায়। হাতের কাছে সম্পূর্ণ উপাদান গুলো নিয়ে যেমন বিভিন্ন ধরনের ফল, বাদাম এবং দুধ সাথে মধু দিয়েও এই মিল্কশেক বানিয়ে ফেলতে পারেন। অনেক স্বাস্থ্যকর এবং সব ধরনের পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি খাবার সকালের জন্য তৈরি হয়ে যাবে।
  • আরো একটি খাবার পনির এবং সসেজ ডিমের সাথে রান্না করে তৈরি করা। ডিমের সাধারণ পেয়াজ মরিচ দিয়ে অমলেট না করে এখানে কিছু সসেজ এবং পনির, সাথে একটু দুধ অলিভ অয়েল এবং স্বাদমতো লবণ ও গোলমরিচ একসাথে নিয়ে ফ্রাই পেনে সিদ্ধ করে নিলেই রেসিপি তৈরি হয়ে যাবে।
  • ওট মিল সকালের নাস্তার জন্য প্রতিদিন খুবই উপযোগী। খুব সহজে সমৃদ্ধ এই খাবারটি ওটস এবং দুধের সাথে বিভিন্ন ধরনের ফল মিশিয়ে এবং এর সাথে যদি বাদাম এবং মাখন যুক্ত করা যায় তবে তা অমৃত হবে।
  • স্যান্ডউইচ ও সকালের নাস্তার জন্য আরো একটি জনপ্রিয় খাবার। স্যান্ডউইচ এর সাথে যদি জ্যাম বা পিনাট বাটার মিশিয়ে খাওয়া যায় তবে সকালের খাবারের পুষ্টির অভাব পূরণ হবে।

১৫ দিনের মোটা হওয়ার উপায়

মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে আমরা শুরু থেকেই বিভিন্ন ধরনের ডায়েট চার্ট বা মিল সম্পর্কে আলোচনা করে আসছি। মোটা হওয়া যেমন সমস্যার বিষয় তেমনি খুব শুকনা হওয়া বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণ। তাই নিয়ম করে ডায়েট চার্ট ফলো করে পরিমিত পরিমাণ খাবার গ্রহণ করে মোটা হওয়ার চেষ্টা করা জরুরী। তা না হলে অসুস্থ হয়ে পড়বেন এবং লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয় না।

আমরা অনেকেই সাত আট বা তারও বেশি সময়ের মধ্যে মোটা হওয়ার জন্য ডায়েট করা শুরু করি। তবে অবশ্যই আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে খুব তাড়াতাড়ি কোন সমস্যাটি সমাধান হয় না। আর যদি এটা হয় ডায়েট বিষয় তবে অবশ্যই সময় দেওয়া জরুরী। কারণ সবুরে মেওয়া ফলে। আর সময় দিয়ে কোন কাজ করলে তা অবশ্যই ১০০ ভাগ সমাধান হবে।

যদি আমাদের উপরে উল্লেখিত নিয়ম অনুসারে আপনি নিয়মিত খাবার খান এবং দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার জন্য দায়িত্ব গুলো পালন করেন তবে অবশ্যই আপনি ১৫ দিনে পাঁচ থেকে ছয় কেজি ওজন বাড়াতে পারবেন। তবে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে পুষ্টিগণ সম্পন্ন খাবার খাওয়ার বিষয়ে। আর তবেই আপনি মোটা হওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন।

আমি মোটা হবো কিভাবে ও মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন

প্রশ্নঃ সকালে খালি পেটে কি খেলে শরীর মোটা হয়?

উত্তরঃ সকালে খালি পেটে প্রোটিন যুক্ত খাবার খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে দুধ, ডিম, কলা বা খেজুর শরীরের জন্য পুষ্টি উপাদান তৈরিতে খুবই সাহায্য করে।

প্রশ্নঃ মোটা হওয়ার জন্য কি কি খাবার খেতে হবে?

উত্তরঃ মোটা হওয়ার জন্য অনেক ধরনের খাবার দাবার রয়েছে যার লিস্ট বলে শেষ করা যাবে না। তবে অবশ্যই এবং হেলদি খাবার খেলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অবশ্যই খাওয়ার সময় খেয়াল রাখবেন যেন উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে পারেন।

প্রশ্নঃ মোটা হওয়ার জন্য কি কি ব্যায়াম করা উচিত?

উত্তরঃ অনেকেই মনে করেন যে মোটা হওয়ার জন্য আবার কেন ব্যায়াম করতে হবে। কিন্তু মোটা হওয়ার জন্য বেশ কিছু ব্যায়াম রয়েছে যা তাড়াতাড়ি আপনাকে মোটা হতে খুবই সাহায্য করবে। কাঁধ, কোমর, পা বা পেট এর অনেক ধরনের ব্যায়াম রয়েছে।

প্রশ্নঃ মোটা হবো কী করে?

উত্তরঃ মোটা হওয়ার জন্য অনেক ধরনের খাবার, ব্যায়াম এবং নিয়ম কানুন মেনে চলা জরুরি। আমরা উপরে আর্টিকেলে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

প্রশ্নঃ বেশি না খেলে মোটা হয় কেন?

উত্তরঃ বেশি না খেয়ে মোটা হওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে হাই প্রোটিন এবং ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া। বয়স বাড়ার সাথে সাথে যেহেতু মেটাবলিজম কমে যায় তাই যে কোন খাবার খেলে কম সময়েই মোটা হওয়া সম্ভব।

মোটা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যায়াম

অতি তাড়াতাড়ি মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে খুঁজতে গেলে দেখা যায় যে অনেকে ব্যায়ামের দিকে দৌড়ায়। আমরা অনেকেই মনে করি যে ব্যায়াম সাধারণত ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু এটি ওজন বাড়াতেও যে অনেক ধরনের উপকারে আসে এমনকি খুব দ্রুত ওজন বাড়ানোর জন্য খুবই কার্যকর। 

বর্তমানে অনেক ধরনের ব্যায়াম রয়েছে যা ওজন বাড়াচ্ছে। আর ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে ছেলেদের ও মেয়েদের মোটা হওয়ার ব্যায়াম একই। কিছু ব্যায়াম সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো যা ওজন কমাতে আপনাকে সাহায্য করবে। 

  • স্কোয়াটস করে অনেকেই বর্তমানে খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমিয়ে ফেলতে পারছেন। এটির সাহায্যে মূলত দেহের নিচের অংশ এবং পায়ের দিকে পেশি শক্ত হয়। খুব কম সময়ের মধ্যে নিজের লক্ষ্য পূরণের জন্য এই ব্যায়াম খুবই উপকারী। তবে অবশ্যই ধৈর্য ধরে এই ব্যায়ামটি করতে হবে।
  • ডেড লিফ্ট আরো একটি কার্যকর ব্যায়াম। সাধারণ কিছু ব্যায়াম করার পর এই ব্যায়ামের অভ্যাস করা জরুরী। ভর উত্তোলন করাই হচ্ছে এর কাজ। তবে শুরুতে খুব বেশি পরিমাণ ভর উঠানো যাবে না। আস্তে আস্তে ভরের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
  • বেঞ্চ প্রেস পিঠ, কাধ, বুক এবং কোমরের পেশি গঠনের জন্য খুবই কার্যকর। শুরুতে দুহাতে খুব কম ওজন নিয়ে এই ব্যায়ামটি শুরু করতে হবে এবং আস্তে আস্তে প্রাকটিস করার মাধ্যমে ব্যায়ামের সাথে শরীর অভ্যস্ত হয়ে যাবে।
  • সাধারণত পুল আপস ডেডলিফ্ট ব্যায়াম করায় অভ্যস্ত হওয়ার পর শুরু করতে হয়। প্রথমে পুরো শরীর ঝুলিয়ে রাখার অভ্যাস না করতে পারলে পায়ের উপর স্টুল রেখে শুরু করতে পারেন। অভ্যস্ত হলে এমনিতেই পুল আপস করতে পারবেন এবং এর পরিমাণ আস্তে আস্তে বাড়াতে থাকবেন। 

ইসলামে মোটা হওয়ার উপায়

আমি মোটা হবো কিভাবে এর সমাধানের জন্য বিভিন্ন ধরনের আলোচনা রয়েছে তবে এর মধ্যে ধর্মীয় উপায়ও রয়েছে। মুসলিম ধর্মালম্বীদের দৃষ্টিতে ইসলামে মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বর্ণনা করা আছে। এ বিষয়ে অনেক হাদিস পাওয়া যায়। হাদিস থেকে জানা যায় যে খেজুর ও শসা যদি একসাথে খাওয়া যায় তবে দ্রুত ওজন বাড়ানো সম্ভব। খেজুর ও শসা খাওয়ার বিষয়ে হাদিসটি নিমরূপ।

ইসলামে-মোটা-হওয়ার-উপায়

হযরত আয়েশা রাঃ বলেছেন যে তার মায়ের ইচ্ছা ছিল স্বাস্থ্যবতী বানিয়ে তাকে নবীজির কাছে পাঠানোর। এ বিষয়ে তিনি অনেক ধরনের উপায় বের করেন কিন্তু কোনটাই সফল হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত তার মা তাকে পাকা খেজুরের সাথে যখন শসা মিশিয়ে খাওয়ানো শুরু করলেন তখন শারীরিক উন্নতি হয়েছিল। এই হাদিসটি সুনানে আবু দাউদ হাদিস নম্বর ৩৯০৩ উল্লেখ রয়েছে।

এছাড়া আব্দুল্লাহ ইবনু জাফর রাঃ বলেছেন যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শসা এবং খেজুর একসাথে খেতেন। এই হাদিসটিও সহীহ ইবনু মা-জাত এর হাদিস নম্বর ৩৩২৫ এ বর্ণিত রয়েছে।
এছাড়াও ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী আপনি যদি সঠিকভাবে চলেন তবে আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে এবং সুস্থ থাকবেন। ইসলাম ধর্ম অনুসারে মোটা হওয়ার এবং শরীর সুস্থ রাখারও দোয়া রয়েছে। 

মোটা হতে দোয়া,

 اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِحَقِّ الْمُصْطَفَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ تُبَارِكَ لِي فِي رِزْقِي وَتَكْثِرَهُ وَتَطَوِّلَ عُمْرِي وَتُصْلِحَ جَسَدِي وَتُعَافِيَنِي مِنْ كُلِّ بَلَاءٍ وَتَرْزُقَنِي مِنْ حَيْثُ لَا أَحْتَسِبُ إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

অর্থঃ হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে মোহাম্মদ সাল্লেল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হক রক্ষা করে প্রার্থনা করছি। আপনি আমার বরকতপূর্ণ করে দিন, বৃদ্ধি করে দিন, আয়ু বাড়িয়ে দিন এবং আমার শরীর সুস্থ রাখুন ও বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করুন। এমন রিজিক দেন যা আমি ভাবতেও পারি নাই। নিশ্চয়ই আপনি সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান।

শরীর ভালো রাখার দোয়াঃ

اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْكُفْرِ وَالْفَقْرِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ 

অর্থঃ হে আল্লাহ আমাদের শরীর সুস্থ রাখুন, শ্রবণশক্তিতে আমাকে সুস্থ রাখুন, দৃষ্টিশক্তিতে সুস্থ রাখুন, আপনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই।

ছোলা খেয়ে মোটা তাজা হউন

রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায় এর মধ্যে বেশ কিছু খাবার রয়েছে যা বেশি করে খেলে খুব তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায়। এসব খাবারে সাধারণত প্রোটিন এবং হাই ক্যালরি থাকে। যার কারণে বেশি করে খেলে কার্যকর ফল পাওয়া যায়। তাই কাঁচ ছোলা খেলে আসলেই মোটা হওয়া সম্ভব। কারণ পুষ্টিকর প্রোটিন এবং ক্যালরিযুক্ত হওয়ার কারণে ছোলা ওজন বাড়াতে পর্যাপ্ত সাহায্য করে। 

এছাড়াও ছোলাতে প্রোটিন, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ এমনকি ফাইবার রয়েছে। আমি চিকন হব কিভাবে এ বিষয়ে যদি কেউ জানতে চান তবে বলে রাখি এ সময় অবশ্যই কম করে ছোলা খেতে হবে। আর ছোলা খাওয়ার আগে বেশ কিছু বিষয় জানা জরুরী।

  • ছোলা অবশ্যই সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে খুব তাড়াতাড়ি হজম হয় এবং পুষ্টি পাওয়া যায়।
  • ছোলাতে থাকা প্রোটিন পেশি গঠনে সাহায্য করে।
  • দীর্ঘ সময় পেট ভরে রাখার জন্য ক্যালোরি সমৃদ্ধ একটি খাবার হচ্ছে এই ছোলা।
  • প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ থাকায় শরীরের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে খুবই উপকারী।
ওজন বাড়ানোর জন্য ছোলা খাওয়ার উপায় হচ্ছে।
  • প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ছোলা খেতে হবে।
  • ছোলা খাওয়ার সময় এর সাথে লেবুর রস এবং মসলা মিশিয়ে নেওয়া যায়।
  • এছাড়া ছোলা ভেজে সালাদ হিসেবে আরো অনেক ধরনের সবজি বা মাংস যুক্ত করে সকাল বা সন্ধ্যার নাস্তা হিসেবেও খাওয়া যেতে পারে।

যেহেতু কাঁচা ছোলা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়ম অনুযায়ী রেগুলার ছোলা খেতে হবে। তবে অবশ্যই শুধু ছোলা ছাড়াও বাকি পুষ্টিকর খাবার ও নিয়মিত খাওয়া প্রয়োজন। তা না হলে শরীরের বৃদ্ধি হবে না।

মোটা হতে সাবুদানার উপকারিতা

আমি যখন মোটা হতে চাই তখন অনেকে সাবুদানা খাওয়ার বুদ্ধি দিয়েছিলেন। অনেকের মতে সাবুদানা খেলে মোটা হওয়া সম্ভব। তবে কিভাবে মোটা হতে হবে এর উপকারিতার জন্য বিশেষজ্ঞদের মতে সাবুদানা সবসময় কাজ করে না। কারণ ওজন বৃদ্ধি করার জন্য সাবুদানা সরাসরি কোন সাহায্য করতে পারেনা। 

সাবুদানা ধান বা গমের থেকে তৈরি এক ধরনের খাবার। এর থেকে বেশ কয়েক ধরনের খাবার প্রস্তুত করা হয়। বেশিরভাগ ডেজার্ট জাতীয় খাবার দাবার সাবুদানা দিয়ে তৈরি করতে সুবিধা ও সুস্বাদু হয়। আর সাবুদানা তে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট নেই এ কারণে মোটা হওয়ার জন্য নিয়মিত পরিমাণে খাওয়া প্রয়োজন নয়।

ওষুধ খেয়ে মোটা হওয়ার সমাধান

আমি মোটা হবো কিভাবে এ বিষয়ে যখন সব ধরনের উপায় থেকে কোন সমাধান পাওয়া যায় না তখন অনেকে ওষুধের শরণাপন্ন হন। আর এইসব ওষুধ খেলে মোটা হতে সুবিধা হয়। খুব তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের ওষুধ রয়েছে বাজারে মোটা হওয়ার জন্য। অবশ্যই ডাক্তারে পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ার জরুরী।

সিনকারা সিরাপঃ

অনেকে মনে করে সিনকারা সিরাপ মোটা হওয়ার জন্য খাওয়া হয়ে থাকে। তবে বিষয়টা সেরকম নয়। মূলত সিনকারা সিরাপে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকার কারণে আপনি যখন সিরাপটি খাবেন তখন পুষ্টির চাহিদা মিটায়ে ফেলার কারণে আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন এবং আপনার স্বাস্থ্য বৃদ্ধি পাবে। যাদের ওজন অনেক কম এবং মুখের রুচি নেই তাদের জন্য এই ওষুধ খুবই উপকারী।

জিংক বি ট্যাবলেটঃ

সিরাপ ছাড়াও ট্যাবলেট খেয়েও মোটা হওয়া যায়। তবে জিংক বি ট্যাবলেটটি মোটা হওয়ার জন্য তৈরি হয়নি। জিং বি ট্যাবলেটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি। আর শরীরে ভিটামিন বি এর অভাব হলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং স্বাস্থ্যের কোন উন্নতি হয় না। তাই জিংক বি ট্যাবলেট খেলে শরীরের ভিটামিনের অভাব পূরণ হয় এবং স্বাস্থ্য ফিরে পাওয়া যায়। 

জোভিয়া গোল্ড সিরাপঃ

এই সিরাপটি তৈরি হয়েছে মানুষকে মোটা করার জন্য। এই সিরাপে থাকা উপাদান শরীরের স্বাস্থ্য উন্নতিতে সাহায্য করে। এই সিরাপটি শরীরের হরমোনের পরিবর্তন করে যার ফলে শরীর এবং উচ্চতাও বৃদ্ধি পায়।

আমি মোটা হবো কিভাবে সে বিষয়ে আরো কিছু প্রশ্ন

প্রশ্নঃ কোন খাবার খেলে মোটা হয় না? 

উত্তরঃ কিছু খাবার আছে যেগুলো খুব বেশি খেলেও ওজন বাড়তে পারে না। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, শসা, বেগুন, তরমুজ, ডিম, আপেল এবং এছাড়াও আরো অনেক ধরনের খাবার আছে।

প্রশ্নঃ মুখ মোটা হলেও শরীর মোটা হয় না কেন?

উত্তরঃ মাঝে মাঝে দেখা যায় যে মুখ মোটা দেখাচ্ছে কিন্তু শরীর মোটা হচ্ছে না। এটা বিভিন্ন ধরনের কারণে হয়ে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জেনেটিক্যাল অথবা অতিরিক্ত পরিমাণ সোডিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়া।

প্রশ্নঃ বেশি সবজি খেলে কি মোটা হওয়া যায়?

উত্তরঃ কিছু সবজি রয়েছে যা বেশি বলে মোটা হওয়া যায়। এদের মধ্যে রয়েছে মিষ্টি কুমড়া এবং আলু। এছাড়াও মুলা গাজর বা কচুতে অতিরিক্ত পরিমাণ ক্যালরি পাওয়া যায়। যেগুলো খেলে ওজন বাড়বে। 

প্রশ্নঃ রাতে শিম খেলে কি মোটা হয়?

উত্তরঃ শিম সাধারণত ওজন কমাতে খুবই সাহায্য করে। কারণ এখানে প্রচুর ভিটামিন এ থাকে। তবে বেশি পরিমাণে শিম খাওয়া ঠিক নয়। কারণ এতে গ্যাস বেড়ে যেতে পারে এবং কিডনির সমস্যা হতে পারে।

আমি মোটা হবো কিভাবে এবং মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য

আমি মোটা হবো কি করে এবং মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে অনেক ধরনের পদ্ধতি বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। যেহেতু অনেকে যারা মোটা হতে পারেন না তাদের শরীরের মেটাবলিজম বেশি অথবা বিভিন্ন ধরনের রোগের কারণে মোটা হওয়া তাদের জন্য সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে আরো কি কি উপায় অবলম্বন করলে মোটা হওয়া যায় আমরা সেই বিষয়েও ধারণা দিয়েছি। 

মোটা হওয়ার জন্য অবশ্যই প্রথমে নিয়ম অনুযায়ী খাওয়া দাওয়া এবং ব্যায়াম করা জরুরী। খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো মেনে না খেলে মোটেও আপনি মোটা হতে পারবেন না। তাই মোটা হওয়া বিষয়ে কিছু টিপস এবং সেই সাথে কোন কোন খাবার খেলে আপনি সহজে মোটা হতে পারবেন আমরা সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আবার মোটা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ঔষধ পাওয়া যায়। 2024112

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফোকাস আইটি ইনস্টিটিউট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url