নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় ও আকর্ষণীয় ক্যাশব্যাক অফার
নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলব এ প্রশ্নটি যারা মোবাইল ব্যাংকিং করতে চান তারা সকলেই জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন। যেহেতু বর্তমান যুগে নগদে লেনদেন করে অনেক ক্যাশব্যাক অফারও পাওয়া যায় তাই এর চাহিদা অনেক।
নগদ একাউন্ট খোলার অনেক ধরনের নিয়ম বিষয়ে আমরা আজকে আলোচনা করব। প্রত্যেকেই যে কোন ফোন ও আইডি নম্বর দিয়ে, এজেন্ট এমনকি সিমের মাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।
পেজ সূচিপত্রঃ নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয়
- নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয়
- নগদে আকর্ষণীয় ক্যাশব্যাক অফার
- বাটন ফোন দিয়ে নগদে একাউন্ট খোলার নিয়ম
- পিন নম্বর ভুলে গেলে নগদের একাউন্ট রিকভার করার উপায়
- নগদ একাউন্ট কিভাবে বন্ধ করা যায়
- নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় ও আকর্ষণীয় ক্যাশ ব্যাক অফার বিষয়ক কিছু প্রশ্ন
- নগদ একাউন্ট খোলার উপকারিতা
- নগদ একাউন্ট নিবন্ধন এর কিছু শর্ত
- নগদ একাউন্টের কিছু সমস্যা
- নগদ একাউন্ট ব্যবহারে সাবধানতা
- নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় এ বিষয়ে আরো কিছু প্রশ্ন
- নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় ও আকর্ষণীয় ক্যাশব্যাক অফার বিষয়ে লেখক এর মন্তব্য
নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয়
নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় এ বিষয়ে সকলেরই আগ্রহ থাকার কারণ হচ্ছে বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং এবং লেনদেনের ডিজিটাল আপগ্রেডেশন। আমাদের দেশেও ডিজিটাল টাকা পয়সা এবং কাগজপত্রের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। বিভিন্ন ডিজিটাল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে এ ধরনের সেবা।
বাংলাদেশের ডাক বিভাগের সাহায্যে ডিজিটাল এই অর্থ লেনদেনের জন্য নগদ তৈরি হয়েছে। তাই এটি সম্পূর্ণ বিশ্বস্ত এবং যেই বিভিন্নভাবে অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করা সহজ হয়েছে। বাংলাদেশে নগদ ২০১৮ সালের নভেম্বর মাস থেকে তাদের যাত্রা শুরু করে। আর বর্তমানে নগদ খুবই জনপ্রিয় একটি মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা।
এর জনপ্রিয়তার মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। বর্তমানে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের রাস্তাঘাটে এমন কি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও নগদের ব্যানার বা লোগো নিয়ে বিভিন্ন এড দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবসময়ই আকর্ষণীয় ও বিভিন্ন ধরনের অফার চলতে থাকে এই নগদে। তাই মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধার জন্য সেবা পাওয়ার আশায় সকলেই একাউন্ট খুলছেন।
তবে পদ্ধতি জেনে রাখলে নগদ একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে সবসময় অন্যের উপর নির্ভরশীল হতে হবে না। ঘরে বসেই আপনি একটি অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলতে পারেন। তাই কিভাবে নগদ একাউন্ট খুলতে পারবেন আপনি নিজে নিজেই সে বিষয়ে আজকে আলোচনা করব।
ইউএসএসডি এর সাহায্যে নগদ একাউন্ট
ইউএসএসডি এর সাহায্যে নগদ একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমেই আপনার মোবাইল ফোনে *১৬৭# লিখে ডায়াল করতে হবে। তারপর আপনার নগদের পিন সেট করতে বলা হবে। সেখানে ৪ ডিজিডের পিন নাম্বার সেট করবেন। পিন নাম্বারটি আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে এবং এই নাম্বারটি কারো সাথে শেয়ার করবেন না।
শেষে নাম্বারটি ডাবল চেক করার জন্য আবারো লিখতে বলা হবে এবং আপনি সেটা সঠিক ভাবে লিখতে পারলেই আপনার একাউন্টটি খোলা হয়ে যাবে।
নগদ অ্যাপ এর সাহায্যে নগদ একাউন্ট
একাউন্ট খোলার জন্য নগদ অ্যাপ এর ব্যবহার একটি স্মার্ট পদ্ধতি। ঘরে বসে খুব সহজেই আপনি নগদ অ্যাপ ডাউনলোড করে খোলার পদ্ধতি খুঁজে বের করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রথমেই আপনি ফোনের প্লে স্টোর থেকে নগদ অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিবেন। এরপর আপনাকে নগদ অ্যাপ রেজিস্ট্রেশন করতে বলবে যখন আপনি অ্যাপটি খুলবেন।
আপনি যেই ফোন নাম্বার দিয়ে নগদ খুলতে চান সেই নম্বরটি দিবেন। এরপর অপারেটর পছন্দ করতে বলা হবে। মানে আপনি কোন সিম দিয়ে মোবাইল খুলছেন তা সিলেক্ট করতে হবে। এবার আপনি একাউন্টটি কোন আইডি দিয়ে খুলবেন সেটা নির্ধারণ করুন এবং আইডি কার্ডের সামনের এবং পিছনের অংশ স্কিনের সামনে ধরে ছবি তুলতে বলা হবে।
এরপরের ধাপে আপনার নিজের ছবি তুলতে হবে। নিজের ছবি তোলার ক্ষেত্রে আলোর ব্যাপারে সাবধান থাকবেন। যেন আপনাকে স্পষ্ট দেখা যায়। অ্যাপে আপনাকে কিভাবে তাকাতে হবে চোখের পলক ফেলার বিষয় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আলো নেওয়ার বিষয় সবই বলে দেওয়া হবে এবং সব ঠিকঠাক থাকলে আপনার সফল একটা ছবি তোলা হবে।
এরপর আপনার পিন সেট করতে বলা হবে। আর ডাবল চেক করার জন্য আবারো পিন নম্বর দিয়ে এই ধাপ সম্পন্ন করতে হবে। এরপর নগদ একাউন্ট ভেরিফিকেশনের পালা। আপনার যে ফোন নাম্বারটি দেওয়া হয়েছে সেই নাম্বারে একটি ওটিপি যাবে। ওটিপি মেসেজ দেখে কপি পেস্ট করবেন এবং এভাবেই আপনার অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়ে যাবে।
উদ্যোক্তা পয়েন্ট থেকে নগদ একাউন্ট খোলা
এই জায়গায় নগদ একাউন্ট খুলতে আপনার কিছুই করতে হবে না। শুধুমাত্র নগর একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো আপনি নিয়ে যাবেন। এরপর যারা এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে তারাই দেখে একাউন্টটি ক্রিয়েট করে দিতে পারবে। সাধারণত অনেক বৃদ্ধ রয়েছেন যারা স্মার্টফোন বিষয়ে সঠিক ধারণা রাখেন না বা অনেকের কাছে স্মার্টফোন নেই তাদের জন্যই এই সুযোগ।
উদ্যোক্তা পয়েন্টে গিয়ে আপনাকে তারা একটি ফর্ম দেবে এবং ফর্ম পূরণ করে উদ্যোক্তাদের কাছে জমা দিলে তারাই আপনার জন্য মোবাইলের একটি নগদ একাউন্ট খুলে দিবে। অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে গেলে ৫০ টাকা ক্যাশ ইন করবেন তাহলে অ্যাকাউন্ট টি একটিভ হবে।
নগদের ইসলামী একাউন্ট খোলার নিয়ম
সাধারণত ইসলামী একাউন্ট খুবই জনপ্রিয় সকলের কাছে কারণ এখানে কোন সুদের কর্মকাণ্ড নেই। ইসলামী একাউন্ট খুলতে ইউএসএসটি কোড ব্যবহার করে যেভাবে খোলা হয় সেভাবেই ওপেন করে একাউন্টের ধরনের জায়গায় রেগুলার এবং ইসলামিক যে দুটি অপশন থাকে তার মধ্যে ইসলামিক অপশনটি পছন্দ করতে হবে।
এমনকি যারা এখন রেগুলার অপশনে চলেন তারা চাইলেও ইসলামিক অপশন তৈরি করে নিতে পারবেন।
নগদে আকর্ষণীয় ক্যাশব্যাক অফার
অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য অফিসিয়ালি নগদ থেকে বিভিন্ন ধরনের ক্যাশব্যাক অফার দিয়ে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে তিন মাসে ১০০০ টাকার ক্যাশব্যাক। নতুন গ্রাহকদের জন্য এটি সর্বোচ্চ অফার। এই অফারটি থাকবে অ্যাকাউন্ট খোলার পর তিন মাস পর্যন্ত।
নিয়ম অনুযায়ী প্রথম মাসে নিজের নম্বরে যেকোনো পরিমাণ টাকা রিচার্জ এর উপর ২০% ক্যাশব্যাক বা সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত টাকা ব্যাক দেওয়া হবে। দ্বিতীয় মাসেও যেকোনো পরিমাণ রিচার্জ এর উপর ২০% ক্যাশব্যাক। এবং তৃতীয় মাসেও একই পরিমাণ টাকা ক্যাশব্যাক পাবেন। এভাবেই একজন নতুন ইউজার যত রিচার্জ করবেন প্রথম তিন মাসে তত ক্যাশব্যাক পাবেন।
এভাবে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পাওয়া সম্ভব। এছাড়া অ্যাপের মাধ্যমেও যদি আপনি নগদ একাউন্ট খুলেন তবে ২৫ টাকা বোনাস পাবেন। অ্যাকাউন্ট খুলে প্রথমে লগইন করলেই এই টাকা চলে আসে। তবে শর্ত অনুযায়ী সব কাজ কমপ্লিট করার পরও যদি ক্যাশব্যাক না পান তবে অবশ্যই ১৬১৬৭ বা ০৯৬০৯৬১৬১৬৭ এই নাম্বারে যোগাযোগ করলে সমাধান পাবেন।
এছাড়াও নগদ একাউন্ট খুলে বিভিন্ন ধরনের এক্সক্লুসিভ অফার আপনি পেয়ে যাবেন।
- বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং সাইটে বিভিন্ন রকম নগদের ক্যাশব্যাক অফার চালু থাকে। ১০ থেকে ২০ পার্সেন্ট ছাড় প্রায় প্রত্যেকটা জিনিসের উপরই পাবেন আপনি।
- এছাড়াও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকানে গেলে নগদে পেমেন্ট করলেও ১০% ছাড় পাওয়া যায়।
- বিভিন্ন ধরনের পণ্যের দাম অনলাইন থেকে অর্ডার করলে নগদে পেমেন্ট করতে পারবেন। এসব ক্ষেত্রেও মাঝে মাঝে নগদে ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকে।
- এমনকি কোভিড ১৯ এর সময় যে টেস্ট ফি ছিল তাও নগদেই পেমেন্ট করা যেত।
বাটন ফোন দিয়ে নগদে একাউন্ট খোলার নিয়ম
নগদ এর একাউন্ট খোলার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের উপায় অবলম্বন করলেও যাদের অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই এবং ঘরে বসেই অ্যাকাউন্ট খুলতে চান তাদের ক্ষেত্রে কিভাবে বাটন ফোন দিয়ে নগদ এর অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব সে বিষয়ে এখন আলোচনা করব। এই অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়মটি ইউ এস ডি কোড ব্যবহার করে নগদের একাউন্ট খোলার মতোই।
এই ক্ষেত্রে এনআইডি কার্ড এর প্রয়োজন পড়ে না। প্রথমেই বাটন ফোনে *১৬৭# ডায়াল করতে হবে।এরপর আপনার কাছে ৪ ডিজিডের একটি পিন নম্বর তৈরি করতে বলা হবে এবং আপনার এনআইডির নাম্বারটি আপনি যে সিম দিয়ে নগদ খুলছেন সিমের ইনফরমেশন থেকেই নগদ তা নিয়ে নেই। সেই তথ্যটি আপনি নোটিশ হিসেবে পাবেন।
লাস্টে সাবধান থাকতে হবে যেন পিন নাম্বারটি গোপন থাকে। আর কনফার্মেশন এর জন্য পিন নাম্বারটি পুনরায় লিখে সেন্ড অপশনে ক্লিক করতে হবে। পিন কোড এর কাজ কমপ্লিট হয়ে গেলে নগদ একাউন্ট খোলা সম্পন্ন হবে। বাটন ফোনে নগদ একাউন্টে ঢুকতে হলে *১৬৭# ডায়াল করতে হবে।
পিন নম্বর ভুলে গেলে নগদের একাউন্ট রিকভার করার উপায়
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নগদের একাউন্টের পিন নম্বর ভুলে গেলে কিভাবে অ্যাকাউন্টটি আবার পুনরায় ফিরে পাওয়া যায় সে বিষয়ে এখন আলোচনা করব। অনেকে অনেক ভুলের কারণে পাসওয়ার্ডটি ভুলে যান। সেক্ষেত্রে কিভাবে একাউন্টে ফিরে পাবেন এবং পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করতে পারবেন তা নিয়ে অনেক টেনশনে থাকেন। এটা টেনশনের কিছু নয় খুব সহজেই পাসওয়ার্ড পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
এজন্য প্রথমে বেশ কিছু তথ্য হাতে রাখতে হবে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শেষ কত টাকা একাউন্টে ছিল, আপনার জন্ম তারিখ এবং পিতার নাম। এরপর আপনি ১৬১৬৭ এই নাম্বারে ফোন দিয়ে আপনার সমস্যাটা জানাবেন। তাহলে তারা আপনাকে আপনার ব্যালেন্স, জন্ম তারিখ এবং পিতার নাম জিজ্ঞাসা করবে।
আপনি সব তথ্যগুলো সঠিকভাবে দিবেন। শেষে তারা আপনার পাসওয়ার্ডটি রিসেট করার সুযোগ করে দিবে এবং আপনি নতুন পাসওয়ার্ড যোগ করতে পারবেন।
নগদ একাউন্ট কিভাবে বন্ধ করা যায়
নগদ একাউন্ট খোলার পর কোন কারনে বন্ধ করতে হলে তার সিস্টেম কি তা আমরা অনেকেই জানিনা। সাধারণত সহজে এই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা সম্ভব না। এমনকি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমেও বন্ধ করা যায় না। নগদ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য বেশ কিছু প্রসিডিউর ফলো করতে হবে।
- প্রথমেই নগদের অফিসে যেতে হবে।
- যে এনআইডি কার্ড বা ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে তা নিয়ে যেতে হবে।
- যদি অন্য কারো এনআইডি কার্ড ব্যবহৃত হয় তবে তাকেও সাথে নিয়ে যেতে হবে।
- তারপর ওই অফিসের নিয়ম অনুসারে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে পারবেন। যেহেতু অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তাই অ্যাকাউন্টে কোন ধরনের টাকা রাখা যাবে না। জিরো ব্যালেন্স করে ফেলতে হবে।
নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় বিষয়ক কিছু প্রশ্ন
প্রশ্নঃ নগদ একাউন্ট খুললে কত টাকা দেয়?
উত্তরঃ নগদে একাউন্ট খোলার মাধ্যমে বিভিন্নভাবে টাকা ব্যাক পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে একজন নতুন গ্রাহক যদি নগদের অ্যাকাউন্ট খোলার পর প্রথম তিন মাস রিচার্জ করেন তবে সে ক্যাশব্যাক পাবেন সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা। এছাড়া সাহায্যে যদি নগদের অ্যাকাউন্ট খোলা হয় তবে ২৫ টাকা বোনাস পাওয়া যায়।
প্রশ্নঃ নগদ ক্যাশ আউট খরচ কত?
উত্তরঃ নগদে অ্যাপের মাধ্যমে হাজারে ক্যাশ আউট চার্জ ১২.৫০ টাকা। ব্যাংক থেকে টাকা স্থানান্তরিত করতে হলে প্রতি হাজারে ১.৫০% চার্জ রয়েছে।
প্রশ্নঃ নগদ একাউন্ট কেন খুলতে হয়?
উত্তরঃ নগদ একাউন্ট মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধার ক্ষেত্রে বা লেনদেনের জন্য, মানুষের জীবনে টাকা পয়সা হাতে নিয়ে ঘোরার থেকে ডিজিটাল ভাবে মোবাইলের সাহায্যে লেনদেন করার সুবিধার্থেই নগদ একাউন্ট খোলা জরুরি। একটি নগদ একাউন্ট বিভিন্ন ভাবে খোলা যায় এবং মোবাইলে *১৬৭# লিখলে আপনার নগদ একাউন্টটি দেখতে পাবেন।
প্রশ্নঃ নগদ একাউন্ট খোলার জন্য কি কি লাগে?
উত্তরঃ নগদ একাউন্ট খুলতে হলে আপনার নাম, জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন নাম্বার, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, মোবাইল নম্বর প্রয়োজন পড়ে।
নগদ একাউন্ট খোলার উপকারিতা
নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম জানার আসল কারণ এর বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিং অনেক সহজ একটি লেনদেনের ব্যবস্থা। আর এর সুবিধা গুলো নিচে দেওয়া হল।
- সম্পূর্ণ ফ্রি ভাবে একাউন্ট খোলা যায়।
- স্মার্ট ফোন বা বাটন ফোন দিও অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব।
- এক নগদ থেকে আরেক নগদে সেন্ড মানি করতে কোন টাকা কাটে না।
- ফ্রিতে ক্যাশ ইন করা যায়।
- নগদে ক্যাশ আউট চার্জ খুবই সীমিত। যা অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর তুলনায় অনেক কম।
- নগদ একাউন্ট থেকে বিভিন্ন সিমে রিচার্জ করা যায়।
- নগদের একাউন্ট থেকে আপনি বাসার বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল দিতে পারবেন।
নগদ একাউন্ট নিবন্ধন এর কিছু শর্ত
নগদ মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খোলার আগে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে। অ্যাকাউন্ট যে খুলবে তাকে অবশ্যই শর্ত গুলো মানতে হবে। নগদ একাউন্ট খুলতে হলে যেই শর্তগুলো জানা জরুরী সেগুলো হচ্ছে।
- দেশের যে আইন এবং ডাক বিভাগের প্রচলিত আইন এর ধারা গুলো মাথায় রেখেই নগদ পরিচালিত হয়। নগদ ব্যবহারকারীকে অবশ্যই তা মানতে হবে।
- ভুল করে অন্য কোন একাউন্টে বা ভুল নাম্বার প্রেস করে ফেললে টাকা আটকে যায় সেটা আর বের করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে নগদ কোন ভাবে দায়ী থাকবে না।
- নগদ ব্যবহারের সময় যে চার্জ কাটা হয় তা প্রত্যেক ব্যবহারী বহন করবে। ব্যালেন্সের অভাবে যদি লেনদেন সম্পূর্ণ না হয় তাহলে এ বিষয়ে নগদ কোনোভাবেই দায়ী নয়।
- ক্যাশ আউট, ক্যাশ ইন বা পেমেন্ট ইত্যাদি ক্ষেত্রে গ্রাহককেই তার লেনদেনের বিষয় বিবেচনা করতে হবে। কোন সমস্যা হলে নগদের কোন দায় নেই।
- নগদ ব্যবহারের জন্য খরচ এবং ব্যয় নিয়ম অনুসারে অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হবে।
- মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ ও সন্ত্রাস বিরোধী আইন- ২০০৯,বাংলাদেশ ডাক বিভাগ কর্তৃক যে নীতিমালা রয়েছে সে অনুযায়ী নগদ যদি গ্রাহকের কাছে কোন ধরনের তথ্য চেয়ে থাকে তবে গ্রাহক তা দিতে বাধ্য থাকবে।
- গ্রাহকের একাউন্টের লেনদেনজনিত সব ধরনের তথ্য বিষয়ক গোপনীয়তা নগদ বজায় রাখবে। তবে আদালতে নিয়ম অনুসারে যদি কোন ব্যক্তির তথ্য সরকার দিতে বলে তবে সেটাও নগদ করতে পারবে।
- একজন গ্রাহক তার পিন নম্বর কোনোভাবে কাউকে দিতে পারবে না। কোন কারনে যদি পিন নম্বরটা বলে দেয় এবং আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয় তবে এর দায়ভার গ্রাহকের নিজের।
- ফোন বা সিম হারিয়ে গেলে সাথে সাথে নগদের হেল্পলাইনে কথা বলে একাউন্টটি বন্ধ করে ফেলা সম্ভব।
- সকল নাগরিক নগদ কর্তৃক প্রেরিত নির্দেশনা মানতে বাধ্য থাকবে।
- নগদ গ্রাহকের কাছে সব ধরনের ফোন কল বা মেসেজ পাঠানোর অধিকার রাখে।
- যেকোনো দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য প্রাথমিক প্রমাণস্বরূপ নগদ এর সিস্টেমে সংরক্ষিত লেনদেন এর তথ্যগুলো প্রদান করা যাবে।
নগদ একাউন্টের কিছু সমস্যা
নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় এটা আমরা জানলেও নগদ একাউন্ট খুলার মাধ্যমে বিশেষ সমস্যায় যে পড়া হয় তা অনেকেই আমরা জানি না। তাই নিজেদের সুবিধার ক্ষেত্রে নগদ একাউন্টের যে সমস্যাগুলো রয়েছে তা জেনে রাখা জরুরী।
- সাধারণত পিন নম্বর অনেকে ভুলে যান।
- ট্রান্সক্রিপ্ট লিমিট এর মধ্যে থাকে না।
- অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যেতে পারে।
- কে ওয়াই সি পুনরায় জমা দিতে হয়।
- ফোন লক হয়ে যায় নগদ একাউন্ট এর জন্য।
- মাঝে মাঝে নগদ একাউন্ট স্থগিত হয়ে যায়।
- সাইন ইন করতে সমস্যা হয়।
- লেনদেনের ঝামেলা হয়।
নগদ একাউন্ট ব্যবহারে সাবধানতা
- নগদ অফিস থেকে কখনোই একাউন্টের পাসওয়ার্ড জানতে চাওয়া হবে না। তাই নগদ অফিস থেকে পাসওয়ার্ড চাচ্ছে বলে যদি কেউ ফোন করে তবে অবশ্যই তারা ফ্রড।
- ১৬১৬৭ ও ০৯৬১৬১৬৭ এ দুটি নাম্বার থেকেই যদি ফোন করা হয় তবে আপনি কনফার্ম থাকতে পারেন যে এটাই নগদের আসল নাম্বার।
- এছাড়াও এই নাম্বার দুটি তে নগদ বিষয়ে কোন সমস্যার সমাধানে ফোন দিতে পারেন।
নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় এ বিষয়ে আরো কিছু প্রশ্ন
প্রশ্নঃ নগদ একাউন্ট দিয়ে কিভাবে ট্রেড করা যায়?
উত্তরঃ নগদ একাউন্টের জন্য কিছু কেনাকাটার সময় নিষ্পত্তির এরমধ্যে সমস্ত খরচ দিয়ে দিতে হবে। এটা যেহেতু ট্রেডিং এর সময় সেট করে ফেলা সম্ভব, তাই এভাবে ট্রেডিং এর সমস্যা এড়াতে নগদ ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্নঃ নগদ একাউন্ট খোলার জন্য কত টাকা লাগে?
উত্তরঃ নগদ একাউন্ট খুলতে সাধারণত টাকা লাগেনা। তবে অ্যাকাউন্ট খোলার পর একাউন্টে 100 টাকা ক্যাশ ইন করা লাগবে এবং এজেন্টের মাধ্যমে কাজ করলে কিছু টাকা চার্জ করতে হয়।
প্রশ্নঃ নগদ একাউন্টে দিনে কতবার ট্রেড করা যায়?
উত্তরঃ নগদ একাউন্টে ট্রেড করার কোন নির্দিষ্ট পরিসীমা নেই। শুধুমাত্র সঠিক অ্যাকাউন্ট এবং আই আর এ মার্জিনে অবস্থিত অ্যাকাউন্টগুলিতেই সেটি প্রযোজ্য। এর অর্থ হচ্ছে আপনি ট্রেডিং এর চিন্তা না করে নগদ একাউন্টে ইটিপি, স্টক আর অল্টারনেট ট্রেড করতে পারবেন।
প্রশ্নঃ আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকলে কিভাবে নগদ খোলা যায়?
উত্তরঃ জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়েও নগদ একাউন্ট খোলা সম্ভব।
নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় বিষয়ে লেখক এর মন্তব্য
নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হবে এবং এর আকর্ষণীয় কিছু ক্যাশব্যাক বিষয়ক আমরা আজকে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যেহেতু এটি ডাক বিভাগের একটি ব্যাংকিং সুবিধা তাই বাংলাদেশের মানুষের জন্য নগদ একটি নিরাপদ লেনদেন সেবা। নগদ একাউন্ট ব্যবহার করে বেশ অনেক ধরনের উপকারিতা এবং সুবিধা ভোগ করা সম্ভব।
ফোকাস আইটি ইনস্টিটিউট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url