সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা, সোনা পাতার ঔষধি গুণাবলী
সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা, সোনা পাতার ঔষধি গুণাবলী সম্পর্কে অনেকেরই জানার আগ্রহ। এই পাতা সম্পর্কে আমরা খুব একটা পরিচিত নই। তাই সোনা পাতার গুণাবলী গুলো আমাদের জানা জরুরী।
পেজ সূচিপত্রঃ সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
- সোনা পাতার উপকারিতা
- সোনা পাতার অপকারিতা
- ঔষধি গুণাবলী সম্পন্ন সোনা পাতা
- সোনা পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- সোনা পাতার গুড়া কিভাবে খাবো
- সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা বিষয়ক কিছু প্রশ্ন
- সোনা পাতা কিভাবে চিনবো
- সোনা পাতার গুণাবলী
- সোনা পাতার ব্যবহৃত অংশ
- বিক্রয়ের জন্য সোনা পাতা
- সেবনের ক্ষেত্রে সোনা পাতা বিষয়ে সতর্কতা
- সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা, সোনা পাতার ঔষধি গুণাবলী বিষয়ক আরো কিছু প্রশ্ন
- সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা বিষয়ে লেখক এর মন্তব্য
সোনা পাতার উপকারিতা
সোনা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আজকের আলোচনা। সোনা পাতা একটি ঔষধি গুনসম্পন্ন এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এই পাতায় পাওয়া যায়। বিভিন্ন উপকারী উপাদান এই পাতার মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। নিয়ম অনুসারে সঠিক মাত্রায় যদি এই পাতার গুড়া খাওয়া যায় তবে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যাবে। সোনা পাতা যে উপকারী তা হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।
হাদিসে রয়েছে, আসমা বিনেত উমাইস (রাঃ) কে নবীজী (সাঃ) জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তিনি জুলাবের জন্য কি ব্যবহার করেন এবং তিনি শিবরাম এর নাম বলেছিলেন। তখন রাসূল (সাঃ) বলেছিলেন যেহেতু এটা খুবই গরম আর যদি কোন জিনিসের দ্বারা মৃত্যু থেকে রক্ষা পাওয়া যেত তবে তা হচ্ছে সোনা পাতা। যেহেতু এর উপকারিতা প্রচুর তাই সেগুলো জেনে রাখা আমাদের জন্য জরুরী।
- হাইড্রোজায়ানথ্রাসিন গ্লাইকোসাইট এবং সিলেটোসাইড এ এবং বি এই পাতায় বিদ্যমান থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এই উপকরণগুলো দুই থেকে তিন শতাংশ পাতায় পাওয়া যায়।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য খুবই উপকারী একটি পাতা এটি। বিপাক ক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য এই পাতার জুড়ি মেলা ভার। সাধারণত আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এজন্য পেটের সমস্যা হলে বা পরিপাক কার্যক্রম সঠিকভাবে পূরণ না হলে এই পাতার খেতে বলা হয়।
- শরীরের ওজন কমানোর জন্য অনেকেই চিন্তায় মগ্ন থাকেন। তাদের জন্য এই পাতাটি বিশেষ উপকারী।
- নিয়মিত সোনা পাতা খেলে খিদা কমে যায়। যার কারনে ওজন কমতে সুবিধা হয়।
- যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য সোনা পাতা নিয়মিত খাওয়া জরুরী।
- কয়েক মাস পর পরই কৃমিনাশক খেতে হয়। আবার অনেকের পেটের সব সময় কৃমির সমস্যা থাকে। তাদের জন্য এই পাতাটির নিয়মিত খাওয়া জরুরী। এতে কৃমির সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়।
- ত্বকের সমস্যার সমাধানেও সোনা পাতা উপকারী।
- যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং শরীর দুর্বল তাদের জন্য সোনা পাতা খাওয়া জরুরী।
- চুলের বৃদ্ধির জন্য এবং চুল পড়া রোধ করার জন্য সোনা পাতা উপকারী ভূমিকা পালন করে। অনেকের মুখের ত্বকে ব্রণের সমস্যা, চুলকানি বা কালো ছোপ দেখা দেয় তাদের জন্য সোনা পাতা ব্যবহার করা জরুরি।
- হজমের সমস্যা থাকলে নিয়মিত সোনা পাতা সেবন করতে হবে। এতে হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয় এবং পায়ুপথের কোন সমস্যা থাকলে সেটাও চলে যায়।
- আলসারের ওষুধ হিসেবে পাতার ভূমিকা অনেক। যেহেতু সোনা পাতা পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং এটি প্রাকৃতিকভাবে একটি অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। তাই নিয়মিত খাওয়ার ফলে পাকস্থলী বা পায়ুপথের কোন সমস্যার উপযুক্ত সমাধান এই আমরা পেয়ে থাকি। তাছাড়া হজমের সমস্যার সময়ে ভেতরে কোন আবর্জনা থাকলে বা রক্তকে পরিষ্কার করতেও সোনা পাতা সাহায্য করে।
- অর্শ রোগ প্রতিরোধ করার জন্য সোনা পাতা ব্যবহৃত হয়। এ রোগের একটি ভালো প্রতিশোধক হিসেবে এটি কাজ করে।
- ইস্টুর, কোলন এবং লিভারের সমস্যার সমাধান সোনা পাতায় রয়েছে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এর ব্যবহার দেখা যায়।
- রেক্টাম জাতীয় ব্যথা নিরাময়ের জন্য সোনা পাতা ব্যবহৃত হয়।
পরিশেষে নিয়মিত সোনা পাতার ব্যবহার এবং সোনা পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের সকলের জেনে রাখা জরুরী। যেহেতু সোনা পাতার এত উপকার আমরা আলোচনা করলাম এছাড়াও আরো অনেক ধরনের উপকারিতাও রয়েছে। তাই সোনা পাতা সেবন অনেক ধরনের রোগের নিরাময়ের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর। এ কারণে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার নিয়ম করে সেবন করা উচিত।
সোনা পাতার অপকারিতা
সোনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা কি অনেকেই তা জানতে চান। আজকে আমরা সেসব বিষয়েই আলোচনা করব। সোনা পাতার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতা ও রয়েছে। উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও অপকারিতার কারণ সঠিক বিধি নিষেধ মেনে না খাওয়া। সাধারণত অপকারিতা নির্ভর করে এইসব ভেষজ উদ্ভিদ যখন নিয়ম মেনে না খাওয়া হয় তখন।
কিভাবে খাব, কখন খাব, কোন অংশ খাব এই বিষয়ে ধারণা না থাকলেও ক্ষতি হয়। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে যদি কোন জিনিস খাওয়া যায় তবে তাতে কোন সমস্যা হয় না। আর দীর্ঘদিন ধরে যদি সোনা পাতা খেয়ে থাকেন তবে উপকারের থেকে অপকারই বেশি হবে। তাই সোনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা কি তা জানা জরুরি।
- সোনা পাতা অবশ্যই গর্ভবতী, শিশু, বয়স্ক এবং অপুষ্টি জনিত বা অন্য কোন ধরনের রোগ বালাই হয়েছে এমন কারো খাওয়া যাবেনা।
- যারা পাতলা পায়খানা জনিত সমস্যায় ভুগছেন যেমন আমাশয় বা ডায়রিয়া তাদের ক্ষেত্রে এই পাতা খাওয়া যাবেনা। কারণ এই পাতা খেলে পাকতন্ত্র বেশি দুর্বল হয়ে যায় এবং পাতলা পায়খানাজনিত সমস্যা আরো বেড়ে যায়।
- এছাড়া বড় কোন ধরনের সমস্যা যেমন আলসার বা অ্যাপেন্ডিসাইড এসব রোগ থাকলে এই পাতা খাওয়ার থেকে দূরে থাকতে হবে।
- সুস্থ ব্যক্তি অতিরিক্ত পরিমাণে যদি সোনা পাতা খেয়ে ফেলেন তবে তাদের নতুন করে পেটের সমস্যা হবে।
- অতিরিক্ত সোনা পাতা খেলে পেটের নতুন নতুন রোগ তৈরি হয়।
- শক্তিশালী যৌগিক পদার্থ থাকার কারণে বাচ্চাদের সেবনের ক্ষেত্রে নিষেধ রয়েছে।
যেহেতু সোনা পাতা খাওয়ার অপকারী দিক রয়েছে তাই অবশ্যই সকলের এই পাতা খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। আর তাছাড়া উপরিউক্ত যেই সমস্যাগুলোর কথা বর্ণনা করা হলো সমস্যার থেকে বাঁচার জন্য বা সমস্যাগুলো যেন আরো বৃদ্ধি না পাই সেজন্য অবশ্যই সব সময় সোনা পাতা খাওয়া যাবেনা।
ঔষধি গুণাবলী সম্পন্ন সোনা পাতা
সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা আলোচনা করে এর ঔষধি গুন সম্পর্কে আমরা কিছুটা ধারণা পেয়েছি, সোনা পাতার ঔষধি গুন বা কোন ধরনের অসুখের জন্য এই পাতা খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এরমধ্যে কয়েকটা বিষয় যার কারনে সোনা পাতা খুবই ব্যবহৃত তার মধ্যে রয়েছে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য সোনা পাতার ব্যবহার।
- হারবাল গবেষণা ইনস্টিটিউট বিশ্বের যা এক নম্বরে রয়েছে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য, তাদের মতে সেটি হচ্ছে এই সোনা পাতা। সারা বিশ্বেই এর ব্যবহারের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই পাতা খাওয়ার ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছে। বেশিরভাগ হারবাল চিকিৎসকরাই মনে করেন যে সোনা পাতা সরাসরি খাওয়ার থেকে গুড়া করে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
- নিয়মিত এটি সেবন করলে পেট পরিষ্কার হয় এবং পেটে যদি অন্য কোন সমস্যা থেকে থাকে সেটাও ঠিক হয়ে যায়। পেটের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। তাই এলোপ্যাথি ওষুধ কিনে টাকা নষ্ট না করে বাড়ির পাশে সোনা পাতার গাছের পাতা খেয়েই এই সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে।
- পেটের কোনো ঘা হলে যদি সোনা পাতা খান তবে সেক্ষেত্রে এই পাতা অ্যান্টিসেপ্টিক বা অ্যান্টি আলসার হিসেবেও কাজ করে। এর ভেতর এমন ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে যা পেটের কোষকে নতুনভাবে তৈরি করতে এবং ক্ষতিকর কোষ ঠিকঠাক করতে সাহায্য করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেটের সমস্যা দূর করা ছাড়াও এ পাতা খেলে ওজন বৃদ্ধি জনিত সমস্যারও সমাধান হয়। এ পাতার নিয়মিত সেবন করলে খুদা কমে যায়।
- অনেকেই প্রশ্ন করেন যে সোনাপাতা কি ওজন কমায়? তার উত্তরে বলা যায় যে এ পাতা খেলে যেহেতু ক্ষুধা মন্দা তৈরি হয় তাই না খাওয়ার জন্য ওজন এমনিতেই আস্তে আস্তে কমে যায়।
- এক্ষেত্রে অবশ্যই সোনা পাতার চা খেলে উপকার বেশি পাওয়া যাবে। চা বানানোর ক্ষেত্রে দুই গ্লাস পানি গরম করে তাতে এক চামচ পাতার গুড়া গুলিয়ে একটা বলক তুলে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে চা। প্রতিদিন এই চা একবার খেলে আপনার কাজ হয়ে যাবে। তবে অবশ্যই সপ্তাহে তিন দিনের বেশি বা একদিন পরপর চা খেতে হবে। তা না হলে প্রতিদিন যদি সোনা পাতা খান তবে পেটের সমস্যা হতে পারে।
- এছাড়া গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় যারা ভুগছেন তারাও রেগুলার একদিন পরপর সোনা পাতার গুড়া পানিতে গুলিয়ে বা চায়ের মত বানিয়ে খেয়ে ফেলতে পারেন।
সোনা পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম
সোনা পাতা খেতে হলে অবশ্যই এর কিছু নিয়ম রয়েছে। সঠিক নিয়ম মেনে এ পাতা না খেলে সমস্যায় ভুগতে হয়। পাতা উপকারী হলেও এর অপকারিতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানা জরুরী। নিচে কোন সময় কিভাবে সোনা পাতা খেতে হবে তা বর্ণনা করা হলো।
শুকনো পাতার গুড়া বা সোনা পাতা সিদ্ধ করে তরল বানিয়ে ব্যবহার করা যায়। এভাবে খেলে বিভিন্ন রোগের সমাধান পাবেন। পাতার গোড়া যদি ব্যবহার করেন তাহলে এক গ্লাস পানিতে এক থেকে দেড় চা চামচ গুড়া চার থেকে পাঁচ ঘন্টার জন্য ভিজিয়ে রাখতে হবে। রাতে ভিজিয়ে রাখলে খুবই ভালো হয় এবং সকালে খালি পেটে এটি খেয়ে ফেলবেন।
প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ গ্রামের বেশি সেবন করা ঠিক নয়। যেহেতু গুড়া ব্যবহার করলে পেট পাতলা হয়ে যায় তাই সেবন করার পর চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এ ব্যাপারে সাবধান থাকবেন। এছাড়াও পানি গরম করে এক টেবিল চামচ গুড়া নিয়ে ফুটিয়ে চায়ের মতো ছেকে খেলে পেট পরিষ্কার হয়। এটি প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন।
অবশ্যই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে গেলে বা অন্য সমস্যা সমাধান হলে খাওয়া বন্ধ করে দিবেন। কারণ প্রতিদিন ব্যবহার করা যাবে না এতে করে পেট পাতলা হয়ে যাবে আমাশয় বা ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে। প্রতিদিন যেকোনো সময় এই পাতা খাওয়া যাবেনা। সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন খেলেই শরীর সুস্থ থাকবে।
নিয়ম অনুযায়ী পরিমাণ মতো পাতা খেলে শরীরের অনেক উপকার পাওয়া সম্ভব। বাজার থেকে গুড়া কিনতে পাওয়া যায় বা রোদে শুকিয়ে গুড়া করে খেতে পারবেন।
সোনা পাতার গুড়া কিভাবে খাবো
সোনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করার সময় আমরা জানতে পারি যে সোনা পাতার গুড়া খাওয়া সবচেয়ে কার্যকর। তাই পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে। সোনা পাতা যেহেতু অনেক এলাকায় পাওয়া যায়। তাই পাতা সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে গুড়া করে ব্যবহার করার চেষ্টা করা উচিত।
সোনা পাতার গুড়া খেলে কাজ সবচেয়ে ভালো হয়। তবে কাঁচা পাতাও ব্যবহার করা যায়। গুড়া খাওয়ার নিয়ম খুবই সহজ। এক গ্লাস পানিতে দেড় চা চামচ সোনা পাতা গুলিয়ে সারারাত রেখে দিয়ে যদি সকালে খাওয়া যায় তবে সবচেয়ে ভালো কাজ হয়।
সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা বিষয়ক কিছু প্রশ্ন
প্রশ্নঃ সোনা পাতা কিভাবে চিনবো?
উত্তরঃ সোনা পাতা চেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে দেখতে কিছুটা মেহেদী পাতার মত। একটি অক্ষের পাশ দিয়ে অনেক গুলো ছোট ছোট পাতা থাকে।
প্রশ্নঃ সোনা পাতা সহজে কোথায় পাওয়া যায়?
উত্তরঃ সোনা পাতা সব জায়গায় পাওয়া যায়। তবে হাতের কাছে পেতে হলে মনোহরীর দোকানে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন।
প্রশ্নঃ সোনা পাতা কোন রোগের জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর?
উত্তরঃ বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সোনা পাতা খুবই কাজে দেয়। তবে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচার জন্য।
প্রশ্নঃ সোনা পাতা খেলে কি ওজন কমে?
উত্তরঃ সোনা পাতা খেলে ক্ষুধা মন্দা হয়। ক্ষুধা কম লাগে। এ কারণে নিয়ম করে এ পাতা খেলে শুকানো সম্ভব।
সোনা পাতা কিভাবে চিনবো
সোনা পাতা গাছ দেখতে কেমন এবং এর ছবি কেমন তা অনেকেই জানেন না। সোনা পাতা গাছ চিনে রাখা জরুরি কারণ যেহেতু এই গাছটির উপকারী গুণ রয়েছে তাই প্রয়োজনে কাজে লাগানো যাবে। এই গাছটি দেখতে কাঁচা অবস্থায় হলুদ সবুজ বর্ণের এবং শুকনো হয়ে গেলে পাতার রং সোনালী এবং হলুদ বর্ণের হয়ে যায়। প্রত্যেকটি ডালের মাথায় হলুদ রঙের ফুল দেখতে পাওয়া যায়।
কোন কোন গাছের ফুল সাদা বা গোলাপি কালারও হয়ে থাকে। আর ফল শিম এর মত চ্যাপ্টা। গাছটির পাতা কিছুটা মেহেদি পাতার মত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ সহ এই আশেপাশের অনেক দেশে সোনা পাতা পাওয়া যায়। আরব দেশেরও বিভিন্ন জঙ্গলে এই গাছ চোখে পড়ে। এই গাছটি মূলত গরম এলাকার জন্য উপযুক্ত।
সুদান, সিন্ধু প্রদেশ, পাঞ্জাব, সোমাদিয়া এবং দক্ষিণ ভারতে বাণিজ্যিকভাবে এই গাছের চাষ হয়।উষ্ণমন্ডলীয় স্থানে জন্ম নেওয়ার কারণে আরো বেশি এই কাজ খুব বেশি পাওয়া যায়। তবে চাষ কম হয়। মিডিলইস্ট এ এই গাছের কদর খুব বেশি।
সোনা পাতার গুণাবলী
সোনা পাতার উপকারিতা আসে তার পাতার গুণাবলী থেকে। যেহেতু সোনা পাতা একটি বীরৎ জাতীয় উদ্ভিদ এবং এ পাতাটি কিছুটা দেখতে মেহেদী পাতার মতো। কিন্তু এই পাতা মেহেদি পাতার মতো গুণাবলী বহন করে না। এখানে রয়েছে হাইড্রোজায়ানথ্রাসিন গ্লাইকোসাইড যার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং পাতায় এটি প্রায় ৩% অবস্থান করে।
এখানে ১০ থেকে ১২% খনিজ লবণ থাকে। ৭ থেকে ১০% মিউসিলেজ রয়েছে। পলিঅল রয়েছে ৮%, এছাড়া সুগার এবং রেজিন পাওয়া যায় এখানে। এসব উপাদান এ গাছের ভেষজ গুণ বাড়িয়ে দেয়। এ কারণে মানুষের বিভিন্ন রকম সমস্যার সমাধান এই গাছ থেকে পাওয়া যায়।
সোনা পাতার ব্যবহৃত অংশ
সোনা পাতার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আমরা জেনেছি। যেহেতু আমরা সোনা পাতা ব্যবহার করে থাকি এবং খেয়ে থাকি তাই এই অংশই খাওয়া সম্ভব। এ গাছের পাতা ফুল এবং ফল সবই খাওয়া যায়। তবে পাতা বেশি উপকারী। গাছটি বীরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ হওয়ার কারণে পাতাগুলো অক্ষ যৌগিক মানে অক্ষের দুই পাশেই অনেকগুলো করে পাতা থাকে।
আর পাতাগুলো দেখতে অনেকটা মেহেদী পাতার মতো হওয়ার কারণে খুব ভালোভাবেই চেনা যায়। কাঁচা অবস্থায় এই পাতাগুলো হলুদ সবুজ রঙের এবং শুকানো হলে হলুদ স্বর্ণালী বর্ণের হয়ে থাকে। অক্ষের মাথায় ফুল ফোটে। ফুলগুলো সাধারণত হলুদ রঙের হয়। এছাড়া কোন কোন ফুল আবার সাদা এবং গোলাপি রঙেরও হয়ে থাকে।
সবশেষে শিম ফল দেখতে পাওয়া যায়। নলাকার এবং চ্যাপ্টা ধরণের এই ফলগুলো। ফলের ভিতর অনেকগুলো বীজ থাকে।
বিক্রয়ের জন্য সোনা পাতা
সোনা পাতার মত এত উপকারী একটি পাতার গুড়া অনেকেই কিনতে আগ্রহী থাকেন। কারণ এ পাতায় যেহেতু অনেক ওষুধী গুণাবলী রয়েছে রোগবালাই হলে ব্যবহার করা সম্ভব। ভেষজ হওয়ার কারণে পাতার গুড়া খুব কম টাকাতেই কিনতে পাওয়া যায়। অনেক দোকান রয়েছে যেখানে এ ধরনের গুড়া বিক্রি হয়।
এছাড়া অস্বাস্থ্যকর খোলা গুড়া কিনতে পাওয়া যায়। তবে পরিষ্কার এবং ভালো মানের গুড়া কেনাই বেশি জরুরী। সোনা পাতার গুড়া মার্কেটে প্রতি ৫০ গ্রাম ৭০ টাকায় কিনতে পাওয়া যায়। এছাড়া কিছু ব্র্যান্ড রয়েছে যেমন খাস ফুড যাদের কাছে এই গুড়া প্রতি ১০০ গ্রামে ৭৫ টাকায় পাওয়া যায়। এভাবেই দামের তারতম্য ভেদে অনেক ধরনের কোম্পানি এই গুড়া বিক্রি করে থাকে।
সেবনের ক্ষেত্রে সোনা পাতা বিষয়ে সতর্কতা
সোনা পাতায় উপকারিতা থাকলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের অপকারী দিক ও রয়েছে। বেশি পাতা ব্যবহার করলে বা খেলে বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা হতে পারে। পরিমাণে বেশি খেলে পটাশিয়ামের অভাব দেখা দেয়। আর এ অবস্থাকে হাইপোক্যালমিয়া বলা হয়। এর ফলে যেই সমস্যাগুলো দেখা দেয় সেগুলো হচ্ছে।
- পেটের পিড়া
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- উচ্চ রক্তচাপ
- পেশির দুর্বলতা
- বমি বমি ভাব
- দৃষ্টিভ্রম
- শ্বাসকষ্টের সমস্যা
সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা, সোনা পাতার ঔষধি গুণাবলী বিষয়ক আরো কিছু প্রশ্ন
প্রশ্নঃ সপ্তাহে কয়দিন সোনা পাতা খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ সপ্তাহে দুইদিন সোনা পাতা খেতে হবে এবং মাসে দশ দিনের বেশি খাওয়া যাবেনা।
প্রশ্নঃ গর্ভবতীরা কি সোনা পাতা খেতে পারে?
উত্তরঃ যেহেতু সোনা পাতা বেশি খেলে লিভার, অন্ত্র, হার্ট ইত্যাদির সমস্যা হতে পারে তাই গর্ভাবতী, শিশু এবং বয়স্কদের না খাওয়াই ভালো।
প্রশ্নঃ সোনা পাতা খেলে কি কোন উপকার হয়?
উত্তরঃ সোনা পাতার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। আমরা উপরে এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা বিষয়ে লেখক এর মন্তব্য
আমরা শেষ পর্যন্ত সোনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা ছাড়াও এর যত রকম গুণাবলী রয়েছে সবই জানতে পারলাম। যেহেতু ব্যবহারে অনেক গুণ পাওয়া যায় এবং পরিমাণ মতো খেতেও হবে এর বেশি খেলে অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে। তাই খাওয়ার বিষয়ে খাওয়ার বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি।
এছাড়াও সোনা পাতার পরিচিতি এবং যেসব রোগের জন্য এটি মহা ঔষধ সেই সব রোগ সম্পর্কেও যেহেতু আমরা জানতে পেরেছি তাই সময় মত যখনই দরকার হবে আমরা পাতার ব্যবহার করতে পারব। সবকিছু জেনে, সঠিক গুড়া বাজার থেকে কিনে অথবা ভেষজে উদ্ভিদ খুঁজে পাতা নিজে নিজেই গুড়া করে নেওয়া সবচেয়ে উপকারী। 2024112
ফোকাস আইটি ইনস্টিটিউট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url